বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক নেতার বিরুদ্ধে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে হুমকি দেয়ার অভিযোগ করেছেন স্ত্রী। বৃহস্পতিবার পাকুন্দিয়া প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানান তিনি। ভুক্তভোগী তরুণীর ভাষ্য, তাদের আড়াই বছরের একমাত্র সন্তানকেও কৌশলে নিজের কাছে নিয়ে গেছেন। এমনকি, পুরোনো তারিখে তালাক দিয়েছেন তাকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা রাজিন সালেহ।
এ বিষয়ে ৩০ জুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী সুমাইয়া আক্তার হাসি (২৫)। তিনি উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের তারাকান্দি চারটেকি গ্রামের তাজউদ্দিনের মেয়ে। অভিযোগ ও সংবাদ সম্মেলন থেকে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিকভাবে হাসির বিয়ে হয় তারাকান্দি গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে রাজিন সালেহের (৩১) সঙ্গে। রাজিন পেশায় একটি মাদ্রাসার কম্পিউটার অপারেটর। তাদের আড়াই বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে।
হাসির অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই সালেহ যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। তখন স্ত্রী-সন্তানের খরচও বহন করতেন না। তার বাবার বাড়ি থেকে খরচ চালানো হতো। এক পর্যায়ে হাসিকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়। কয়েকবার লোক পাঠিয়ে ভালো ভালো কথা বলে বাড়ি নিয়ে যান সালেহ। এর পরও খারাপ আচরণের কারণে হাসি বাবার বাড়ি চলে আসেন।
ইউএনওর কাছে দেয়া অভিযোগে হাসি লিখেছেন, সালেহ হুমকি দিচ্ছেন, তিনি এখন এনসিপির বড় নেতা। দেশ চালান, যা বলবেন, তাই হবে। হাসি ইউএনওর কাছে ঘটনার তদন্ত করে স্বামীর সংসারে শান্তিপূর্ণভাবে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান।
এদিকে এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের সই করা চিঠিতে গত ২৯ জুন রাজিন সালেহকে প্রধান সমন্বয়কারী করে দলের পাকুন্দিয়া উপজেলার ১৮ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। এর দুই দিন আগে ২৭ জুন সালেহ নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেভিট করে হাসিকে তালাক দিয়েছেন। সেটি নোটিশ রেজিস্ট্রি ডাকযোগে পাঠিয়েছেন ৩ জুলাই। কিন্তু নোটিশ হাসি গ্রহণ করেননি বলে জানিয়েছেন সালেহ।
এনসিপি নেতা রাজিন সালেহ এ বিষয়ে বলেন, হাসির চলাফেরা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিলো। আচার-আচরণও খারাপ ছিলো। বনিবনা হচ্ছিলো না। সে কারণেই তালাক দিয়েছেন। তার দাবি, একটি রাজনৈতিক মহল তার সুনাম নষ্ট করতে এসব অভিযোগ তোলাচ্ছে।
পাকুন্দিয়ার ইউএনও মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর রাজিন সালেহকে নোটিশ করেছিলাম মীমাংসায় বসার জন্য। কিন্তু পরে জানা গেছে, তিনি আগেই তালাক দিয়েছেন। ফলে এটি এখন আইনি প্রক্রিয়ায় চলে গেছে।