বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানকে হত্যার হুমকি এবং তাঁর বাসার সামনে সন্ত্রাসী মবের তাণ্ডবের প্রতিবাদে মঙ্গলবারও উত্তাল ছিল কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা অষ্টগ্রাম ও ইটনা।
বিকালে ইটনা উপজেলা সদরে মুক্তিযোদ্ধা-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে যেকোন ধরনের ষড়যন্ত্র প্রতিরোধের ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিবাদ সমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধা রওশন আলী রুশো, বীর মুক্তিযোদ্ধা নবী হোসেন তজু মিয়া, এসএম কামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুজ্জামান ঠাকুর স্বপন, সাংগঠনিক সম্পাদক তরিকুল ইসলাম জুয়েল, উপজেলা কৃষকদলের সভাপতি মো. হাবিবুল হান্নান, সদর উপজেলা বিএনপি সভাপতি এম এ ছালেক, উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব এডভোকেট তানজির সিদ্দিকী রিয়াদ, সিনিয়র যুগ্মআহ্বায়ক নূরুল ইসলাম অপু, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মনসুর আলম, উপজেলা যুবদলের যুগ্মআহ্বায়ক মুকুল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশের আগে কয়েক হাজার ছাত্রজনতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্টিত হয়। ইটনা পুরানবাজারে উপজেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে থেকে বের হওয়া বিক্ষোভ মিছিলটি বাজার ও উপজেলা সদরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিল থেকে ফজলুর রহমানের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। এ সময় মিছিল-স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
এদিকে এর আগে দুপুরে অষ্টগ্রাম উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। কয়েক হাজার নেতাকর্মী উপজেলা পরিষদ মাঠ থেকে মিছিল শুরু করে সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জামতলী মোড়ে গিয়ে সমাবেশ করেন। মিছিলে নেতাকর্মীরা স্লোগানে বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের ফজলু ভাই, আমরা তোমায় ভুলিনি”, “রণাঙ্গনের ফজলু ভাই, আমরা তোমায় ভুলিনি”, “মুক্তিযুদ্ধের শত্রুরা হুঁশিয়ার সাবধান”, “ফজলু ভাইয়ের কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে”। সমাবেশে বক্তারা বলেন, ফজলুর রহমান একজন সাহসী মুক্তিযোদ্ধা ও বিএনপির দুর্দিনের কান্ডারি। ৫ই আগস্টের পর থেকে জামায়াতে ইসলামি ও এনসিপির পক্ষ থেকে একাত্তর ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী বক্তব্য আসতে থাকে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ফজলুর রহমান এসব দেখে চুপ থাকতে পারেননি। এরপর থেকেই একটি স্বাধীনতাবিরোধী চক্র এবং এনসিপি তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়, বিভ্রান্তি ছড়ায় এবং অপপ্রচার চালায়। বক্তারা অভিযোগ করেন, এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই তাঁকে এখন হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তারা অবিলম্বে এসবে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। বক্তারা হুঁশিয়ার করে বলেন, সরকার যদি এ বিষয়ে ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে প্রয়োজন হলে ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রামের সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা অভিমুখে মার্চ করা হবে।
বক্তারা আরও বলেন, হাওরের হৃদস্পন্দন ফজলুর রহমানকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার ক্ষমতা কারও নেই। তাঁকে রাজনীতি থেকে সরানোর যে কোনো ষড়যন্ত্র জনগণ দাঁতভাঙা জবাব দেবে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন অষ্টগ্রাম উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি জাকির হোসেন সাফি, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম শাহীন, যুবদলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন আনার, সাধারণ সম্পাদক আলী রহমান খান, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এস এম জাভেদ, আহ্বায়ক তিতুমির হোসেন সোহেল, সদস্যসচিব আল মাহমুদ মোস্তাকসহ বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতারা। এর আগে সোমবার বিকালে ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে অষ্টগ্রামে হাজারো নেতাকর্মী মিছিল করেন। মিছিল শেষে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিগত ১৭ বছর আমরা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা যখন হামলা-মামলায় জর্জরিত হয়েছি, তখন বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট ফজলুর রহমান যোগ্য অভিভাবকের মতো আমাদের পাশে থেকেছেন, খোঁজখবর রেখেছেন। জামায়াত-এনসিপি’র ষড়যন্ত্রের কাছে যদি ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, আমরা অষ্টগ্রাম-ইটনা-মিঠামইনের বিএনপি নেতৃবৃন্দ ঘরে বসে থাকবো না। আমরা সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করে আমাদের নেতাকে ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে বের করে নিয়ে আসবো।