রোববার (১০ আগস্ট) সাড়ে এগারোটার দিকে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, মাজারে কিছু হামলা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে রিপোর্ট আছে। আমি আন্তঃমন্ত্রণালয় আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য। এগুলো আমদের প্রতিমাসেই আলোচনা হয়। আমরা মাজার এবং মসজিদ কতৃপক্ষকে অনুরোধ করবো আপনারা সিসি ক্যামেরা বসান। কোনো দুর্বৃত্ত যদি মাজারে, মসজিদে হামলা চালায় তাহলে তাকে চিহ্নিত করা সহজ হবে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় মামলা হয়েছে। কিছু মানুষকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। সামাজিক সচেতনতা লাগবে। প্রতিটি মাজারে পুলিশ নিয়োগ করবো কিভাবে, এতো ফোর্সতো আমাদের নাই। সামাজিক সচেতনতা লাগবে, সর্বস্তরের মানুষ আমরা মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, মাজার এগুলো আমরা পাহারা দিব। কেউ যদি এখানে হামলা চালায় অথবা ধ্বংস করার পায়তারা করে তাকে আমরা আইনের আওতায় আনবো। স্পেসিফিক মামলা হলেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের আইনের আওতায় আনবে।
এর আগে সকাল ৯টায় সদর উপজেলার মারিয়া ইউনিয়নের মোল্লাপাড়া এলাকায় জেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, খুব দ্রুত দৃষ্টিনন্দন পাগলা মসজিদের ১০ তলা বিল্ডিংয়ের কাজ করা হবে। এখানে বহুমুখী কাজ সম্পাদন করা হবে। বর্তমান আধুনিক তুরষ্কে যে দৃষ্টিনন্দন মসজিদগুলো আছে তার আদলেই পাগলা মসজিদ ও ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। অন্তবর্তীকালীন সরকার যতদিন আছে নির্বাচনের আগ মূহুর্ত পর্যন্ত এই সময়ের মধ্যেই আমি নিজে এসে পাগলা মসজিদ ও ইসলামিক কমপ্লেক্সের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করে যেতে পারবো। এটা আমার প্রত্যাশা। এখানে অনেক কাজ এগিয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, পাগলা মসজিদের ৯০ কোটি ৬৪ লাখ ১৩টা ব্যাংকের একাউন্টে এফডিআর করে রাখা আছে। ওইখান থেকে লভ্যাংশ পাওয়া যায়। ইসলামিক স্কলার ও মুফতি সাহেবদের পরামর্শক্রমে লভ্যাংশের টাকা মসজিদে খরচ করার বিধান নাই। এটা দিতে হবে গরিব, দুঃখী, অনাথ এবং অসুস্থ অসহায় মানুষদের। ইতিমধ্যে পাগলা মসজিদের লভ্যাংশ থেকে প্রায় ৮০ লাখ টাকা এ সমস্ত মানুষকে দেয়া হয়েছে। আমি আজ আরেকটা প্রস্তাব করেছি, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা দরিদ্র ছাত্র তারা পড়াশোনা করতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার মতো জামাকাপড় যার নাই এই সমস্ত দুস্থদেরকেও এই লভ্যাংশ থেকে একটা অংশ গরিব শিক্ষার্থীদের দেয়া হউক। এটা একটা বিরাট কাজ হবে। এতে আমাদের চোখ খুলে যাবে।
পাগলা মসজিদ পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজাবে রহমত, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইমরানুল ইসলাম, আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা শিব্বির আহমদসহ পাগলা মসজিদ কমিটির সদস্যরা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
পরে দুপুর ১২টার দিকে তিনি আল জামিয়াতুল এমদাদিয়া কর্তৃক আয়োজিত “ইসলামী অর্থনীতির গুরুত্ব” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।