মা্লইলষ্টোন স্কুলে বিমান দুর্ঘটনায় বাংলাদেশের সর্বত্র শোকের মাতম। এমন দিনে মিরপুরে ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। প্রথমবারের মতো টি টুয়েন্টি কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার (২২) জুলাই সন্ধ্যায় আগে ব্যাটিং করে ১৩৪ রানের লক্ষ্য দেয় পাকিস্তানকে। জবাবে খেলতে নেমে পাকিস্তান ১২৫ রানে অলআউট হয়। তাতেই ৮ রানের জয়ে এক ম্যাচ আগেই সিরিজ নিশ্চিত করে ফেলে লিটন দাসরা। পাকিস্তানের বিপক্ষে এর আগে দুই বা ততোধিক ম্যাচের তিনটি সিরিজেই জয়হীন ছিল বাংলাদেশ। এবার কেবল জয় নয়, সিরিজই নিশ্চিত করে ফেললেন লিটন-শামীমরা।
বাংলাদেশ পাকিস্তানের বিপক্ষে সাফল্যহীন ছিল । আগে খেলা তিন সিরিজের সবগুলোতেই হেরেছে তারা। প্রথমবার ২০২০ সালে লাহোরে কুড়ি ওভারের সিরিজ খেলতে নেমে দুই ম্যাচেই হেরেছিল বাংলাদেশ। পরের বছর নিজেদের মাঠ এই মিরপুরেই হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল তারা। এরপর লাহোরে গিয়েও পাল্টায়নি দৃশ্যপট। চলতি বছর মে মাসে পাকিস্তান সফরে গিয়ে তিন ম্যাচ সিরিজের সবগুলোই হেরেছে লিটনরা। অবশেষে নিজেদের চতুর্থ সিরিজ খেলতে নেমে জয়ের স্বাদ পেলো বাংলাদেশ। মঙ্গলবার এক ম্যাচ হাতে রেখে পাকিস্তানকে হারিয়ে ইতিহাস গড়লো তারা।
টস জিতে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের পাঠায় পাকিস্তান। শুরুতেই স্বাগতিকদের চেপে ধরে সফরকারীরা। পাওয়ার প্লেতে ২৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে আগের ম্যাচে পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের হাইলাইটসই যেন ফুটিয়ে তুলেছিল বাংলাদেশ। তবে পঞ্চম উইকেটে শেখ মেহেদী ও জাকের আলী মিলে ৫৩ রানের জুটি গড়েন। ৩৩ রানে মেহেদী আউট হলেও দলকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দিতে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করেন জাকের। ইনিংসের শেষ বলে লম্বা শট খেলতে গিয়ে ৫৫ রানে আউট হন তিনি। ৪৮ বলে ১ চার ও ৫ ছক্কায় জাকের নিজের ইনিংসটি সাজান। এর বাইরে বাংলাদেশের কোনওি ব্যাটারই দাঁড়াতে পারেননি পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণের সামনে। জাকের ও মেহেদীর ব্যাটে ১৩৩ রান সংগ্রহ করতে পারে বাংলাদেশ।
পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানগণ ১৩৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে বাংলাদেশের বোলারদের তোপের মুখে পড়েন । প্রথম ৬ ব্যাটারদের কেউই দুই অঙ্কের ঘরে রান তুলতে পারেননি। এরপর ছোটখাটো কিছু জুটি গড়লেও পাকিস্তান ৪৭ রান তুলতেই হারিয়ে ফেলে ৭ উইকেট। যদিও অষ্টম উইকেটে বাংলাদেশকে বেশ চাপে ফেলে দেয় পাকিস্তান। আব্বাস আফ্রিদি ও ফাহিম আশরাফ মিলে গড়েন ৪১ রানের জুটি। ১৩ বলে ১৯ রান করার পর আব্বাসকে বোল্ড করেন শরিফুল। তখনো মনে হচ্ছিল বাংলাদেশের জয় অতি নিকটে। কিন্তু নবম উইকেটে ফাহিম ও আহমেদ দানিয়াল আগ্রাসী ব্যাটিং করে পাকিস্তানের জয়ের সম্ভবনা তৈরি করে ফেলে।
শেষ ১২বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন হয় ২৮ রানের। দানিয়েল পর পর দুই বলে চার মেরে ব্যবধান কমিয়ে আনেন। পরে ফাহিম মারেন আরও একটি ছক্কা। সব মিলিয়ে হারের শঙ্কা উকি দেয় বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে। শেষ বলে ফাহিমকে ফেরান রিশাদ। ৩২ বলে ৫১ রান করে আউট হন তিনি। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। মোস্তাফিজের প্রথম বলেই চার তুলে নেন দানিয়াল। পরের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে শামীম হোসেনের তালুবন্দি হন পাকিস্তানের এই ব্যাটার। আর তাতেই ৮ রানে জয় নিশ্চিত করে ফেলে বাংলাদেশ।
বোলারদের মধ্যে শরিফুল ১৭ রানে তিনটি উইকেট শিকার করেন। দুটি করে উইকেট নেন তানজিম হাসান সাকিব ও মেহেদী। মোস্তাফিজ ও রিশাদ নেন একটি করে উইকেট।