শনিবার (৩০ আগস্ট) সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান (যুগ্ম সচিব), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজাবে রহমত, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী ও জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক মো. রমজান আলীসহ উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে দানসিন্দুক খোলা হয়। দানসিন্দুক খোলাকারীন সময় সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করেন।
দিনব্যাপী গণনা শেষে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানসিন্দুক এবার ভেঙেছে সব রেকর্ড। মোট ১০টি লোহার দানসিন্দুক ও ৩টি ট্রাঙ্ক থেকে পাওয়া গেছে ১২ কোটি ৯ লাখ ৩৭ হাজার ২২০ টাকা, সঙ্গে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার। শনিবার (৩০ আগস্ট) রাত সোয়া ৮ টার দিকে গণনা শেষে এই হিসাব নিশ্চিত হয়।
এ কাজে মসজিদ কমিটি, স্থানীয় মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষার্থী, রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ প্রায় চার শতাধিক মানুষ অংশ নেন।
এর আগে সর্বশেষ গত ১২ এপ্রিল দানসিন্দুক খোলা হয়েছিল, তখন পাওয়া গিয়েছিল ৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এবার সেই রেকর্ড ভেঙে ৩২ বস্তা টাকা মেলে।
দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন দান করতে। নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার জমা হয় দানসিন্দুকে, আর গবাদিপশু, ফলমূল, হাঁস-মুরগি, কোরআন শরিফসহ অন্যান্য সামগ্রী নিলামঘরে তোলা হয়।
জুমার দিনে মসজিদ প্রাঙ্গণে উপচে পড়ে মুসল্লিদের ভিড়। প্রধান মসজিদ ছাড়িয়ে সেতু ও সড়কজুড়ে নামাজ আদায় করেন হাজারো মানুষ।
মসজিদের দান থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে ছয়তলা বিশিষ্ট আধুনিক মসজিদ ও ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজ চলছে। কমিটি জানিয়েছে, “পাগলা মসজিদ ইসলামিক কমপ্লেক্স”-এর প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। সম্পন্ন হলে একসঙ্গে ৩০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী জানান, দানসিন্দুক থেকে রূপালী ব্যাংক পর্যন্ত টাকা নিরাপদে পৌঁছে দিতে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বলেন, মসজিদের দান শুধু ব্যাংকে জমা রাখা হয় না, বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদান হিসেবেও নিয়মিত বিতরণ করা হয়।